গাজীপুরে বেতন বাড়ানোর দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে মো. রাসেল হাওলাদার (২৫) নামে এক পোশাকশ্রমিক নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার (৩০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঝালকাঠির সদর উপজেলার খাগুটিয়া গ্রামের হান্নান হাওলাদারের ছেলে রাসেল। বর্তমানে গাজীপুর বাসন মালেকের বাড়ি এলাকায় একটি মেসে থাকতেন।
রাসেলকে হাসপাতাল নিয়ে আসা তার সহকর্মী ও রুমমেট মো. আবু সুফিয়ান জানান, স্থানীয় 'ডিজাইন এক্সপ্রেস লিমিটেড' নামে একটি কারখানায় কাজ করেন তারা। কারখানাটির ইলেকট্রিশিয়ান রাসেল হাওলাদার। স্থানীয় ৫-৬টি গার্মেন্টের কর্মীরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। সেজন্য সকালে তাদের কারখানাটি কর্তৃপক্ষ ছুটি ঘোষণা করেন। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কারখানা থেকে বের হয়ে তারা পায়ে হেঁটে বাসার দিকে রওনা হন। তখন কারখানাটির সামনে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে রাসেলের বুকের ডান পাশে এবং ডান হাতে গুলিবিদ্ধ হন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নেওয়া হয় শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেলে। অবস্থার অবনতি দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মরদেহটি মর্গে রাখা হয়েছে।
এদিকে, বেতন বাড়ানোর দাবিতে টানা সপ্তম দিনের মতো সোমবার সকাল ৯টা থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাসের আশপাশের এলাকার আন্দোলনে নামেন বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা। এসময় কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুরের পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মিছিল বের করেন তারা।
পরে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। তখন উত্তেজিত শ্রমিকরা একটি সরকারি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।